করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানী বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বিজিবি মতবিনিময় সভা করেছে। টেকনাফস্থ ২ নম্বর বিজিবি ব্যাটালিয়ানের সদর দপ্তরে ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় এই মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়। সভাপতিত্ব করেন টেকনাফস্থ ২ নম্বর বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক (সিও) লেঃ কর্ণেল আলহাজ্ব আবু জার আল জাহিদ। এতে করিডোর ব্যবসায়ীগণ অংশগ্রহণ করেন। সভায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত দেড় মাস যাবৎ গবাদিপশু আমদানী হ্রাস পাওয়া বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং দ্রুত আমদানী বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে টেকনাফস্থ ২ নম্বর বিজিবি ব্যাটালিয়ানের সদর দপ্তর সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে বৈরী আবহাওয়া, লাগাতার বৃষ্টি, সাগর উত্তালসহ গরু ব্যবসায়ীদের নানান সমস্যার কারনে দীর্ঘ এক মাস ধরে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আসছেনা। এতে করিডোরের স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার হারাচ্ছে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব।
করিডোরের পশু ব্যবসায়ীরা বলেন, ইদানিং মিয়ানমারে গরুর দাম আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। আবার মিয়ানমারের পশু ব্যবসায়ীরা করিডোরে গরু নিয়ে আসার পর তাদের নিজের ইচ্ছা মত দাম বেশি দাবি করে। তাদের দাবিকৃত দাম দিয়ে বিক্রি করে আমাদের কোন মুনাফা হচ্ছেনা। তাই আমরা আপাততঃ গবাদিপশু আমদানী বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমানের বৈরী আবহাওয়া পরিস্থিতি ভাল হয়ে আসলে আমরা মিয়ানমার থেকে পুনরায় গবাদিপশু আমদানী করে ব্যবসা চালিয়ে যাব।
এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু না আসার কারনে স্থানীয় বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা সু-কৌশলে মহিষের মাংসকে গরুর মাংস বলে অবাধে বিক্রি করে যাচ্ছে। বর্তমানে টেকনাফ বাজারে গরুর মাংস নেই বললে চলে।
গবাদিপশু ব্যবসায়ী টাকা লেনদেন খারাপ করার কারনে মিয়ামারের পশু ব্যবসায়ীরা এখন সহজে কাউকে বিশ্বাস করছেনা। এতে আমরা ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা পড়েছি বিপাকে। আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকা মিয়ানমারের গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের কাছে আটকা পড়েছে। মোহাম্মদ শরীফ মেম্বার তাঁর কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা পাওনার কথা স্বীকার করে বলেন, মিয়ানমারের গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের সাথে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সাময়িক সমস্যা। তা অল্প কয়েক দিনের মধ্যে তাদের টাকা পরিশোধ করে আগের মত গবাদিপশু আমদানী পুনরায় চালু হবে।
শাহপরীরদ্বীপ করিডোর ব্যবসায়ীর সভাপতি মো. হাসেম বলেন, বর্তমান বাজারে মিয়ানমারের গরুর দাম আগের চেয়ে একটু বেশি হওয়ায় তার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন থেকে লাগাতার বৃষ্টি, সাগর উত্তাল ও বৈরী আবহাওয়ার কারনে মিয়ানমার থেকে আপাততঃ গবাদিপশু আমদানী করছেনা ব্যবসায়ীরা। এসব গবাদিপশু আমদানী করা হয় মিয়ানমারের আকিয়াব, মেয়ং, টংগু ইত্যাদি অঞ্চল থেকে। এ সমস্ত এলাকা থেকে গবাদিপশু শাহপরীরদ্বীপ করিডোরে আসতে সময় লাগে ৩-৪ দিন। তাই মিয়ানমার ও বাংলাদেশের গবাদিপশু ব্যবসায়ীরা ঝুকি নিয়ে আমদানী আপাতত বন্ধ রেখেছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভাল হলে গবাদিপশু আমদানী পুনরায় চালু করা হবে। তিনি আরো জানান, মিয়ানমার থেকে আপাতত গবাদিপশু না আসলেও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের মংডুসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিষ আসছে।
পাঠকের মতামত